শিলাজিৎ একটি সুপরিচিত আয়ুর্বেদিক ভেষজ। এর সুবিধাগুলি প্রায় ৫০০০ বছর আগে ভারতে আবিষ্কৃত হয়। হিমালয়ের ১৮০০০ ফুট থেকে এই ভেষজ পাওয়া যায়। শিলাজিৎ শব্দটি পুরুষদের অপরিচিত নয়। তবে শিলাজিৎ শুধু যৌন শক্তিবর্ধক নয়। এটি শরীরে আরও বেশ কিছু পুষ্টি সরবরাহ করে। প্রাথমিকভাবে এটি তার খনিজ পদার্থের সম্পদের জন্য পরিচিত। যা মানুষের শক্তি ও বিভিন্ন কাজে উৎসাহ বাড়ায়।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় শিলাজিত খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।এটি দীর্ঘায়ু এবং অনেক অন্যান্য রোগের জন্য হাজার হাজার বছর ধরে ব্যবহার করা হচ্ছে। শিলাজিত একটি পুরু, কালো-বাদামী খনিজ কাঠকয়লা, যেটি হিমালয় পর্বতমালার ফাটলের পড়ে গরমে বাইরে বেরিয়ে যায়। শিলাজিত শতাব্দী পুরাতন, বিশৃঙ্খল উদ্ভিদ যা ভিটামিন, খনিজ ও অন্যান্য পুষ্টির শক্তিশালী উৎস। এটি একটি শক্তিশালী অভিযোজন, যা সকল ধরণের মানসিক ও শারীরিক চাপ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
শিলাজিতের লাভঃ
• শক্তি এবং পুনরুদ্ধার প্রদান করাঃ
শতাব্দী ধরে, আয়ুর্বেদিক ওষুধের অনুশীলনকারীরা শক্তি বৃদ্ধি এবং শরীরকে পুনর্জীবিত করার জন্য শিলাজিত ব্যবহার করেছেন। শরীরের মধ্যে মাইটোকন্ড্রিয়া কাজ বৃদ্ধি করে এটি শরীরকে শক্তি প্রদান করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য এই ঔষধি শক্তিশালীর সঙ্গে শরীরকে পুনর্জীবিত করে। র্যাডিকেলস রোগের কারণের সাথে লড়াই করে, এটি রাসায়নিক এবং অন্যান্য বিপজ্জনক এজেন্টের কারণে শরীরের অভ্যন্তরীণ ক্ষতি মেরামত করে।
• হরমোন এবং ইমিউন সিস্টেম ব অনাক্রম্যতা নিয়ন্ত্রণ করে:
শিলাজিতের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ এটি আপনার শরীরের বিভিন্ন সিস্টেম, যেমন আপনার ইমিউন সিস্টেম অনাক্রম্যতা এবং হরমোনের ভারসাম্যকে নিয়ন্ত্রণ করে।
• মস্তিষ্ক সুস্থ রাখে:
গবেষণায় দেখা গেছে, এতে বিশেষ নিউরোপ্রোটেক্টিভ ক্ষমতা রয়েছে। এর মধ্যে থাকা পুষ্টি অ্যালঝাইমারসরোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।
• এটি ব্যথা থেকে রেহাই দেয়।
• এটি এক শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা হিসেবে কাজ করে।
• ডায়বেটিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করেঃ
শিলাজিত মধুমেহ বা ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে গ্লুকোজ এবং লিপিড প্রোফাইলকে কম করতে সাহায্য করে।
• ক্যানসার থেকে বাঁচতে এবং রক্ষা করতে সাহায্য করেঃ
ফুসফুস, স্তন, কোলন, ডিম্বাশয় এবং লিভার ক্যানসার থেকে বাঁচায় ও অন্যান্য বিভিন্ন ধরণের ক্যানসারের জন্য শিলাজিত উপকারী।
• জ্বলন কম করতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যর সাথে লড়াই করতে সাহায্য করেঃ
এটা গ্যাস্ট্রিক, আলসার চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ করতে কার্যকর।
• এটা কঙ্কাল স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
• হার্ট এবং রক্তের জন্য ভালঃ
এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রনের উপস্থিতি রয়েছে যা অ্যানিমিয়া দূরীকরণে সহায়তা করে।
• নিয়ন্ত্রণহীনতা ভাঙতে সাহায্য করে:
অন্যান্য ফার্মাসিউটিক্যাল পদার্থ সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার কারণে, শিলাজিতআসক্তি ভঙ্গ প্রক্রিয়ার উপর একটি গভীর প্রভাব ফেলে। যখন এটি অপিওড রোগীদের দেওয়া হয়,তখন আসক্তি হ্রাস করে এবং প্রত্যাহার উপসর্গগুলি হ্রাস করে।
• এটি ব্যাপকভাবে পুরুষদের টেস্টরন হরমোন ব্যালান্স করতে সাহায্য করে।
খাবারের নিয়ম ও পরিমান:
প্রতিদিন একবার (সকালে বা রাতে) একটা কাঁচা ছোলা এর পরিমান কুসুম গরম পানিতে , চায়ের , কফি তে মিশিয়ে খেতে হবে।
শিলাজিতের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া:
সঠিকভাবে এবং সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করা হলে, শিলাজিতের কোন গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয় না। কিন্তু যদি অত্যাধিক বেশি পরিমাণে গ্রহণ করা হয়, তাহলেনিম্নলিখিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে:
1. শরীরে অত্যধিক তাপ উদ্দীপনা।
2. পায়ে জ্বালা অনুভব করা।
3. হাত ও পায়ে বেশি উষ্ণতা অনুভব করা।
4. প্রস্রাব বৃদ্ধি বা কমতে থাকা।
5. অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া: শিলাজিতেরমধ্যে উপস্থিত কোনো যৌগ বা উপাদানে আপনার অ্যালার্জি থাকে তাহলে অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া লক্ষণ হিসাবেবমি, মাথা ঘোরা, হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি, চুলকানি ইত্যাদি হতে পারে। তাহলে তখন শিলাজিত ব্যবহার করা বন্ধ করুন।
